বিম্লেষণে: মোঃ আতাউর রহমান, প্রকাশক ও সম্পাদকবিম্লেষণে: মোঃ আতাউর রহমান, প্রকাশক ও সম্পাদক

গোটা পৃথিবী আজ অশান্ত বাদ পড়েনি বাংলাদেশও। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত কান্ডারি হুশিয়ার কবিতা স্মরণে শুরু করছি শান্তির “ছিড়িয়াছে পাল কে ধরিবে হাল……. নিতে হবে তরী পার?” স্বাধীনতার ৫৫ বছরেও প্রতিহিংসা আর লোভের রাজনীতির আগুনে জ্বলছে বাংলাদেশ এর শেষ কোথায়? ১৭৫৭ সাল পলাশীর যুদ্ধে বিশ্বাস ঘাতকতা আর ব্রিটিশ বেনিয়াদের কাছে পরাজয়ে ২০০ বছরের গোলামী, সু-পরিকল্পিত ভাবেই ১৯৪৭ সাল ধর্মে তত্ত্বে দুটি ভাগে বিভক্ত একদিকে সুবিশাল ভারত অন্যদিকে দুই হাজার মাইলের ব্যবধানে পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠন এবং ২৩ বছরের পশ্চিম পাকিস্তানের দুঃশাসনের আবারো গোলামী। ৩০ লক্ষ শহীদ আর ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের ৫৫ বছরে অনেক শাসনের পালাবদল হলেও জনগণ আজও পরাধীন। জনগণের প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির অগ্রযাত্রা কেবলই হতাশার! সর্বশেষ ২০২৪ সালে ১লা জুলাই হতে ৫ই আগস্ট আপামর ছাত্র জনতার মাত্র ৩৬ দিনে শত শত ছাত্র জনতা, পুলিশ, সাংবাদিকদের শাহাদৎ বরণ, হাজার হাজার পঙ্গুত্ব, লক্ষ লক্ষ জীবন বাঁজি রাখা প্রতিবাদে প্রতিরোধে আর সশস্ত্রবাহিনীর সর্বদা দেশের পক্ষে সমর্থনে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয় দেশের ৬ কোটি জনসমর্থনের সর্ববৃহৎ দল, ৬ বারের আওয়ামী লীগ সরকার। অসীম ত্যাগের অর্জিত স্বাধীনতা আর কতদিন চড়া মূল্যে কিনতে হবে? জনগণকে দিতে হবে চরম খেশারত? এজন্য দায়ী দেশের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক বৃহৎ দলগুলো, পরিবারতন্ত্র, ব্যক্তিতন্ত্র, একনায়কতন্ত্র, বাণিজ্যতন্ত্র, আমলাতন্ত্র, দুর্নীতির মহা সিন্ডিকেট এবং প্রভু নির্ভরতা। এসব কখনই রাজনীতি ও রাষ্ট্রের জন্য আর্শিবাদ নয়, অভিশাপ। রাষ্ট্র ক্ষমতাকে দূর্নীতির আলাদিনের চেরাগ বানিয়েছে ভাগেযোগে। যেটুকু উন্নয়ন করেছে তার চেয়ে ১০গুন বেশি জনগণের অসম্ভব কষ্টের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এখান থেকে বের হয়ে আশা অনেক কঠিন একটি চ্যালেঞ্জের। রাষ্ট্রের মহাজন যাদের অসম্ভব কষ্টের অর্থের ট্যাক্সে দেশ চলে সেই সব বীর জনতা এই ১২ মাসে কি চেয়েছে আর কি পাচ্ছে রাষ্ট্রকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে অপ্রত্যাশিত মব জাস্টিশ যেমন বেড়েছে তেমনি চরিত্রের পরিবর্তন ঘটেনি যেন মুদ্রার এপিট-ওপিট! অপরাধ যেন ওপেন সিক্রেট। যা খুবই দুঃখজনক-লজ্জাজনক, হতাশাজনক! অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান এবং সেনা প্রধান সুরক্ষা দিতে কেন ব্যর্থ হচ্ছে? মেটিকুলাস ডিজাইনে প্রতিহিংসার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে দেশ যেন লাইফ সার্পোটে চলে না যায়? বীর জনতার অন্তর চক্ষুর ভাবনার প্রত্যাশাকে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান, সাধনা, গবেষনায় ও বিশ্লেষণে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। কোঠা সংস্কার, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনটি ছিলো অতি ক্ষুদ্র থেকে বৃহত্তর, সামান্য থেকে অসামান্য, সাধারণ থেকে অসাধারণ এক বিপ্লবী অধ্যায়। জনগণ এমন এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে চাই ৫৫ বছরে যারা জনতার চোখে প্রমাণিত রাষ্ট্রীয় অপরাধী জনতার রায়ে তাদের অবশ্যই লাল কার্ড দেখাতে হবে। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ, অসম্প্রদায়ীক, স্বাধীনতা বিরোধী মুক্ত, জুলাই বিপ্লব, বহুত্যবাদের সবার আগে বাংলাদেশ এই দর্শনে কোন বিতর্ক, অজুহাত, আপোষ, নিরপেক্ষতার সুযোগ নেই। জুলাই বিপ্লবে দেশ মহাজন জনতার চোখে স্বপ্নের বাংলাদেশ যেমনটি দেখতে চাই, জনগণ একদিন হবে বিশ্ব শান্তির অগ্রদূত এবং বাঙ্গালী সত্বায় মাথা উঁচু করে পথ চলবে। ছাত্র সমাজ স্বাধীনতার ৫৫ বছরে এসে আবারো প্রিয় জীবন এবং প্রিয় পরিবারকে পিছে ফেলে যে অসীম ত্যাগ আর বিসর্জন দিয়েছে, এ ঋণ কখনো শোধিবার নয়, সেইসব তরুণ বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে সর্ব ক্ষেত্রে হবে সম্মানিত। সকল শিক্ষা আর কর্মক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক সুমর্যাদায় নিয়মিত চর্চা হবে বাংলা ভাষা, জাতীয় শপথ এবং বীরোচিত ইতিহাস। মাতৃভূমি, মুক্তিযুদ্ধ, জুলাই বিপ্লবী চেতনায় এ দেশের কোমলমতি স্নেহের প্রতিটি শিশুই শারিরীক, মানসিক, মানবিক, নীতি নৈতিকতা, শৃঙ্খলা, মূল্যবোধ, দেশপ্রেমে প্রকৃত মানব সন্তানের মত গড়ে উঠবে। শক্তিশালী জাতি গঠনে সময় উপযোগী বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষার বিকল্প নেই। যেখানে রাজধানী থেকে গ্রাম পর্যন্ত ধনী গরীব পার্থক্য থাকলেও একই শিক্ষা মানের সুযোগ থাকবে। উচ্চ শিক্ষা হতে হবে আন্তর্জাতিক সমমান। ছাত্র জীবন ভবিষ্যৎ জাতি গঠনের সবচেয়ে বড় সুদীর্ঘ সময় অনুশীলনের ক্ষেত্র, যেন এই মূল্যবান সময়কে শতভাগ কাজে লাগাতে পারি। যেখানে উত্তম শিক্ষক, উত্তম শিক্ষা ব্যবস্থা, উত্তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই ৩ এর সমন্বয়ে নিয়ে যেতে পারে আন্তর্জাতিক সর্বোচ্চ সাফল্যর শীর্ষে। যেখান থেকে যুগে যুগে অপরাজিত বীরোচিত ছাত্র রাজনীতি থেকেই রাষ্ট্রের জন্য বেরিয়ে এসেছে, আসছে এবং আসবে নির্ভীক দৃঢ়চেতা চৌকশ প্রতিভার তরুন প্রজন্মের ভিপি নূর, তারেক, রাশেদ খান, নাহিদ, সারজিস, হাসনাত, আসিফ, মাহফুজ, আক্তার হোসেন, নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, শামান্তা শারমিন, আব্দুল হানান মাসউদ, ডা. তাসমিন জারা, ওসমানহাদি, কমরেড সোহেল এমন সব তরুণ তাঁরকা রাজনীতিবীদ খুব বেশি বেশি প্রয়োজন। সুস্থ্য, সবল, সুশৃঙ্খল, চরিত্রবান, কঠোর পরিশ্রমী, দেশপ্রেমী ছাত্র যুব তারুণ্য শক্তিই পারে একটি জাতিকে সাফল্যের শীর্ষে নিতে। আমাদের দেশে ৬০% তারণ্যে নির্ভর এই মহা সুযোগকে সফল করতে চাই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পৃষ্টপোষকতা। রাষ্ট্র ব্যবস্থাপক ও ব্যবস্থাপনা যত ভালো হবে একটি দেশ তত সমৃদ্ধশালী হবে। পবিত্র সংবিধান পরিপূর্ণ নাগরিকবান্ধব হবে। মানুষের মাঝে থাকবেনা কোনো প্রতিহিংসা। থাকবেনা কোনো ভেদাভেদ। সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে দূর হবে কুসংস্কার আর বৈষম্য। থাকবেনা কোনো বেকারত্বের অভিশাপ। সর্বোচ্চ শিক্ষা শেষে নিশ্চিত থাকবে কর্মসংস্থান। এ দেশের কোনো নারী ও শিশু হবেনা নির্যাতিত। নারী জাতির হবে ন্যায্য-অধিকার। নারী পুরুষের প্রতিটি হাত হবে উন্নয়নের হাতিয়ার। মেধা, প্রতিভা, যোগ্যতা, পদমর্যাদায় থাকবে পার্থক্য। জীবন চলার পথে থাকবে ধনী গরীবের বৈষম্য কিন্তু সব ক্ষেত্রেই থাকবে সৃষ্টিকর্তার দেখানো পথে দারুন সমন্বয়। যেখানে প্রতিটি নাগরিক যার যার স্থান থেকে স্থায়ীভাবে ফিরে পাবে তাদের ন্যায্য সম্মান ও অধিকার। যাকাত ভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তোলার রয়েছে সুবর্ণ সুযোগ। ক্ষুদ্র দেশ বিপুল জনসংখ্যা অভিশাপ নয় আর্শিবাদ, আন্তর্জাতিক সম্পদে রূপান্তর করতে হবে। প্রতিটি জনগন হবে দক্ষ জনশক্তি। প্রতিটি পরিবার হবে প্রতিষ্ঠান। স্বনির্ভর লক্ষ্যে সৎকর্ম যতই ছোট হোক তাকে ভৎসনা নয়, উৎসাহিত করতে হবে। সকলকে চাকুরী দেওয়া সম্ভব না হলেও সকলকে স্বনির্ভর করা সম্ভব। দেশপ্রেম, মেধা, প্রতিভা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা, সাহস আর সততার হবে যথার্থ মূল্যায়ন। অনাহারে, অকারণে, বিনা চিকিৎসায়, অধিকার বঞ্চিত হয়ে মারা যাবেনা একজনও মানুষ। পথপাশে থাকবেনা কোনো ভিক্ষাবৃত্তি, পথশিশু, অসহায় বৃদ্ধ, থাকবে না কোন ভূমিহীন, থাকবে না কোন গৃহহীন, তেমনি প্রতিটি শিশু এবং বৃদ্ধ পিতা-মাতার জন্য থাকবে পূর্ণ নিশ্চয়তা। সর্বোচ্চ নিঃস্বার্থ ভালোবাসা পাবে আমৃত্যু বেদনার সাথী প্রতিটি প্রতিবন্ধী। কখনো হবেনা আপোষ দূর্নীতি, রাহাজানি, প্রতারণা, সন্ত্রাস, বিশ্বাসঘাতকতা, জঙ্গীবাদের সাথে। পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন সেবার মাধ্যম এবং নোবেল প্রফেশন রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পাবে ন্যায়-নীতি, প্রীতি, বন্ধন, মেধা, মানবতা, ত্যাগের এক মহান দৃষ্টান্ত আর জন প্রতিনিধি হবে সকল নাগরিকের প্রকৃত সেবক, দেশের উন্নয়নে এবং নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় হবে শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার। ক্ষমতা থেকে বিদায় নিলেও থাকবে সমান জনপ্রিয়তা। রাস্তা থেকে রাজ প্রাসাদ পর্যন্ত আইনের ঊর্ধ্বে থাকবেনা কেউ। অসীম ত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতা, রাজনীতি, গণতন্ত্র, জনঅধিকার আর জুলাই বিপ্লব কখনই যেন কোন অপশক্তির কাছে জিম্মি আর পকেটবন্দী না হয়ে যায়। তেমনি প্রতিষ্ঠা পাবে না কোন শোষণ নীতি, পরিবারতন্ত্র, গোষ্ঠীতন্ত্র, ব্যক্তিতন্ত্র। হবে না কোনো বৃটিশ, পাকিস্তানী, ভারত, চীন, অ্যামেরিকান কলোনী। এ দেশ ও জনগন যেন আধুনিক নীল চাষের বলী না হয়। ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় সিদ্ধান্ত যত কঠিনই হোক তা বাস্তবায়ন করতে হবে। স্বাধীন দেশে, স্বাধীন মতামতেই হবে সকল ধরনের সময় উপযোগী আইন-প্রণয়ন, প্রয়োজনে প্রতিটি ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই পালনীয় বাণীগুলি আইনে রূপান্তর হোক। চাকচিক্য পদ পদবী দিয়ে নয় প্রকৃত সেবক কর্মগুণে প্রমাণ করতে হবে। রাষ্ট্র ক্ষমতা যেন সেবার বদলে ভোগ আর শোষনের হাতিয়ার না হয়। ক্ষমতার বড়াই নয় অধিকার প্রতিষ্ঠায় জীবনবাজি লড়াই করতে হবে, মৃত্যু যেমন সত্য তেমনি যার যার কর্মফলের হিসাব তাকেই দিতে হবে। দেশ ও জনগণের সর্বোচ্চ প্রয়োজনেই করতে হবে সর্বোচ্চ আয়োজন। রাষ্ট্রকে নির্দিধায় যে কোন গঠনমূলক সমালোচনা সহ্য করতে হবে এবং ভালোকে স্বাগত জানাতে হবে। রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল ক্ষেত্রে যেমন থাকবে সময় উপযোগি সুযোগ-সুবিধা তেমনি নিশ্চিত করতে হবে স্বচ্ছতা আর কঠোর জবাবদিহিতা। প্রতিটি নাগরিকের স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকা, মত প্রকাশ, সম্মান এবং মৌলিক অধিকার সুযোগ নয়, এটা তার জন্মগত এবং সাংবিধানিক অধিকার। বর্তমানে দ্রুত গতির প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক বিশ্ব বহু কারণে হচ্ছে বিভক্ত। দেশে প্রতিহিংসা, লোভ আর ধ্বংসের রাজনীতি চাই না তেমনি আর কোন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ চায় না। আমাদের বিদেশ নীতি হবে সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভারসাম্যপূর্ণ। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এবং পরিচালনায় যারা থাকবে তাঁরা হবে মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাই বিপ্লবী চেতনায় প্রয়াত মহান নেতাদের আদর্শ অনুস্মরণে মানবতার এক অকৃত্রিম বন্ধু, আলোকিত রাজনীতির উদাহরণ। সেবাই হবে মানবতার শ্রেষ্ট কর্ম এবং ধর্ম। মুখস্থ বিদ্যা দিয়ে মানবিক সেবক হওয়া সম্ভব নয়। উত্তম জ্ঞান চর্চা আলোর পথ দেখাবেই। বাঙ্গালী সবচেয়ে আবেগময় জাতি। এদেশে বিবেচনায় ভোট হয় মাত্র ১০ ভাগ আর আবেগে ভোট হয় ৯০ ভাগ এমন কঠিন সমীকরণে নিঃসন্দেহে জুলাই বিপ্লবের এই নবযাত্রা হবে এক মহা চ্যালেঞ্জের। জাতীয় ইস্যুতে অবশ্যই গণভোট এবং “না”ভোটের বিধান চালু করতে হবে। গ্রাম নির্ভর বাংলাদেশ গড়ে উঠবে যেখানে সকল উন্নয়নের প্রাণশক্তি তৃণমূলকে সর্বোচ্চ মূল্যায়ণ করে নব শপথে, নতুন স্বপ্নে, নতুন শতকে সূদুর ভবিষ্যৎ বহুমূখী আন্তর্জাতিক পরিকল্পিত পরিকল্পনায় এ দেশ হবে সমৃদ্ধি অর্জনের এক নতুন উদাহরণ। ঐশ্বরিক দান মানব সম্পদ, কৃষি উর্বর জমিন, নদীমাতৃক, সুবিশাল বিশ্ব সেরা সুন্দরবন ও সমুদ্র-সৈকত, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ঘেরা, চমৎকার ভৌগলিক অবস্থান, সি এন্ড সান ইকোনমি, গর্বিত বাঙালী সংস্কৃতি, বীরোচিত অনন্য ইতিহাসের এ দেশ হবে বিশ্ব মানবতার অন্যতম দর্শন, যার অপর নাম হবে বন্ধু প্রতিম মানবিক অসাম্প্রদায়িক বিশ্বজয়ই বাংলাদেশ। ধর্মকে পুজি করে আর কোন সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নয়। ধর্ম, বর্ণ, দল, মত, জাত, যার যার দেশ ও জনগণ হবে সবার। জনগন গোলাম বা চাকর নয়, জনগণই এ দেশের মহাজন, দেশের ডোনার এবং পৃষ্টপোষক, দেশের কারিগর, দেশের হাতিয়ার, দেশের সম্পদ। জনগণের অসম্ভব কষ্টে অর্জিত অর্থের বিনিয়োগ যেন কোনো ভাবেই বৃথা না যায়। স্বাধীন গণমাধ্যম ছাড়া জনতার গণতন্ত্র পরাধীন। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করতে পেরেছি ঠিকই কিন্তু এখনো মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়নি। স্ব-স্ব ক্ষেত্রে একটিও মানুষ, সম্পদ, প্রতিষ্ঠান এবং সময় হবে না নষ্ট, নিরাপদ শব্দটি সর্বক্ষেত্রে হবে সুনিশ্চিত সর্বপরি সার্বিকভাবে রাষ্ট্র থাকবেনা অনিরাপদে। এই অসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ সমাপ্তি করবে বর্তমান ও আগামীর বিজ্ঞান নির্ভর চৌকস মানবিক দেশপ্রেমিক তরুণ প্রজন্ম। উন্নয়ন নাগরিকের উপহার নয়, অধিকার। ত্যাগের দর্শনে নব্য জুলাই বিপ্লবী চেতনায় সর্বত্র হবে উন্নয়নে তারুণ্যের জয়গান এবং স্লোগান হবে সহযোগিতা, বন্ধন, উন্নয়ন, শান্তি এই চার ঐক্যের প্রতীক। রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ-নিষিদ্ধ খেলা, সংখ্যালগু-সংখ্যাগুরু বিভেদ, ভয়াবহ প্রতিহিংসা-বিদ্বেষের রাজনীতির চাষ চিরতরে বিলুপ্ত করতে হবে। সব কিছুর উর্দ্ধে দেশ ও নাগরিক কল্যাণই হবে মূখ্য বিষয়, জাতীয় স্বার্থই হবে চূড়ান্ত বিবেচ্য। আমাদের শপথ হোক, প্রতিজ্ঞা হোক অসীম ত্যাগের মুক্তিযুদ্ধ আর জুলাই বিপ্লবের বিজয় অর্জন যেন কোন ভাবেই বৃথা না যায়। ৫৫ বছরের সকল ফ্যাসিস্ট, ফ্যাসিজম, ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচার, স্বৈরাতন্ত্র, অপশক্তি, অপসিন্ডিকেট, কর্তৃত্ববাদ এবং ভয়াবহ অপ্রতিরোধ্য দূর্নীতিকে জিরো টলারেন্সে রুখে দিতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সর্বপ্রথম গণভোটের মাধ্যমে সর্বজন সমর্থিত অতি প্রয়োজনীয় সংস্কারের মধ্যে দিয়ে জাতীয় শপথে সব দলের অংশগ্রহণে একটি জনবান্ধব, মানবিক, নিরাপদ, আস্থার ও বিশ্বাসের জনতার পবিত্র ভোটের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ার নতুন যাত্রা শুরু হবে এবং প্রতিবারের জন্য অথবা আগামী দুই মেয়াদের ১০ বছরের জন্য একটি জাতীয় সরকার গঠনের মধ্যে দিয়ে। জনগণের রায়ই হবে চূড়ান্ত। স্বাধীনতার ৫৫ বছরে এসেও এ দেশের জনগন বার বার হয়েছে বলির পাটা, প্রতারিত, বঞ্চিত, পথহারা, দিকহারা, নেতৃত্বহারা। তারুণ্য নির্ভর নব্য জাতীয় নাগরিক পার্টি সহ সকল রাজনৈতিক দলের কাছে অতিব গুরুত্বপূর্ণ এই বার্তাটি পৌছে যাক “রাজনীতিতে বিখ্যাত হওয়ার চেয়ে বিশ্বস্ত হওয়া অনেক কঠিন দায়িত্বের এবং চ্যালেঞ্জের” বিজয়ী হলে ইতিহাসে বিখ্যাত আর ব্যর্থ হলে কুখ্যাত অধ্যায়। দেশ মহাজন নাগরিক দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এবং প্রত্যাশা নতুন দেশ বিনির্মানে রাষ্ট্র পরিচালনায় যারাই থাকবে পবিত্র ভোট, পবিত্র শপথ, পবিত্র কলম, পবিত্র পোষাক, পবিত্র চেয়ার আর কখনই শ্রদ্ধাহীন, বিতর্কিত, অমানবিক, অবিশ্বাসী এবং অনিরাপদ হবেনা। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর স্মরণীয় বাণী দিয়েই শেষ করছি। জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় না হলে বিপ্লবের সফলতা ব্যর্থ হবে। আজ সেই ঐক্যই সময়ের দাবী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *