লালমনিরহাট প্রতিনিধি: দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুর দ্রুত সংস্কার করেছে উপজেলা প্রশাসন। দৈনিক ‘আমার বাংলাদেশ’ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই প্রশাসনের এই দ্রুত পদক্ষেপে জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। গোটা এলাকাজুড়ে এখন আদিতমারী উপজেলা প্রশাসনের এমন প্রশংসাই শোনা যাচ্ছে।
উপজেলার মহিষখোঁচা থেকে পলাশী বাইপাস সড়কের মাঝিটারী দাসপাড়া এলাকায় অবস্থিত এই সেতুটি। মহিষখোঁচা হয়ে আদিতমারী ও পলাশী বাজার, এবং লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পথ। প্রতিদিন শত শত মানুষ, শিক্ষার্থী, কৃষক ও বিভিন্ন যানবাহন এই সড়ক ব্যবহার করে। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটির ওপর বড় গর্ত ও ফাটল থাকায় যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল।
গত ২০ জুন দৈনিক ‘আমার বাংলাদেশ’-এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম বাবুলের নজরে আসে সেতুটির ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা। তিনি দ্রুত এ বিষয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন তৈরি করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে আদিতমারী উপজেলা প্রশাসনের তাৎক্ষণিক নজরে আসে বিষয়টি।
পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরপরই আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিধান কান্তি হালদার এবং উপজেলা প্রকৌশলী ফজলুল হক যৌথভাবে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মীরা জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার কাজ শুরু করেন। রড ও সিমেন্টের মাধ্যমে সেতুর ভাঙা অংশ শক্তভাবে পূরণ করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তোলা হয়। বর্তমানে ওই সড়কে সব ধরনের যানবাহন নিরাপদে চলাচল করছে বলে জানিয়েছে আদিতমারী উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে ইউএনও বিধান কান্তি হালদার বলেন, “জনগণের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সংবাদ প্রকাশের পরই আমরা দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি এবং জরুরি সংস্কার কাজের নির্দেশ দেই। এটি এখন সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য নিরাপদ হয়েছে—এটাই আমাদের বড় সাফল্য।”
স্থানীয় বাসিন্দা সাইদুর রহমান বলেন, “অনেক দিন ধরে এই সেতুর ভাঙা অবস্থা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। পত্রিকায় খবর প্রকাশ হওয়ার পর প্রশাসন যে দ্রুত উদ্যোগ নিয়েছে—তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এখন আমরা স্বস্তির সঙ্গে যাতায়াত করতে পারছি।” তিনি আরও বলেন, যেকোনো বিষয়ে প্রশাসনের নজরে এলে জরুরি পদক্ষেপ নিলে যে সাফল্য মানুষের মনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ আমাদের এলাকার এই সেতুটি।
আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী ফজলুল হক জানান, “আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন করেছি। ভবিষ্যতে এই সেতুটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে আমাদের।”
এদিকে, প্রশাসনের এই কার্যকর পদক্ষেপে স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, মহিষখোঁচা-পলাশী বাইপাস সড়কটি এই অঞ্চলের অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার এবং কৃষিপণ্য পরিবহনের অন্যতম পথ এটি। তাই এই সেতুটির সংস্কার দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এলাকাবাসীর। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় আদিতমারী উপজেলা প্রশাসন প্রশংসায় ভাসছে। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, এ ধরনের ইতিবাচক উদ্যোগ যেন অব্যাহত থাকে।