খিলক্ষেতের অস্থায়ী মণ্ডপ অপসারণ নিয়ে ব্যাখ্যা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় একটি অস্থায়ী দুর্গাপূজার মণ্ডপ অপসারণের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৭ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কোনো অবস্থাতেই সরকারি জমি দখল করে ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ অনুমোদিত নয়—এটি আইনবহির্ভূত।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে—খিলক্ষেত এলাকায় একটি দুর্গামন্দির ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে প্রকৃত ঘটনা ভিন্ন। ২০২৩ সালের দুর্গাপূজার সময় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় পূর্বানুমতি না নিয়েই বাংলাদেশ রেলওয়ের জমিতে একটি অস্থায়ী মণ্ডপ নির্মাণ করেছিল। পরে রেল কর্তৃপক্ষ শর্তসাপেক্ষে পূজা আয়োজনের অনুমতি দেয়—শর্ত ছিল পূজা শেষে মণ্ডপটি অপসারণ করতে হবে।

কিন্তু পূজা শেষ হওয়ার পর আয়োজকেরা সেই শর্ত পালন না করে মণ্ডপটি স্থায়ী রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং সেখানে কালীমূর্তি স্থাপন করেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একাধিকবার স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পরেও আয়োজকেরা তা অগ্রাহ্য করেন।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাসিন্দা, আয়োজক ও অন্যান্য পক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর ঘোষণা দেয়, রেললাইনের দুই পাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকানপাট, রাজনৈতিক কার্যালয়সহ সব অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণ করা হবে। কারণ এই জমিগুলো ‘ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ সেকশন ডুয়েল গেজ লাইন’ এবং ‘টঙ্গী-জয়দেবপুর ডাবল লাইন’ প্রকল্পের আওতায় নতুন রেলপথ নির্মাণে প্রয়োজন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বারবার সতর্ক করার পরও কোনো প্রতিক্রিয়া না পেয়ে অবশেষে ২৪ ও ২৫ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সব অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ জুন শান্তিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়, যার আওতায় অস্থায়ী পূজামণ্ডপটিও সরিয়ে নেওয়া হয়।

উচ্ছেদের সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন এবং যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় প্রতিমা বিসর্জনের কাজ সম্পন্ন হয়। সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে—আইন অনুযায়ী গড়ে ওঠা ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয় এবং ধর্মীয় বৈষম্যের কোনো স্থান নেই। তবে সরকারি জমি জবরদখল করে কোনো স্থায়ী বা অস্থায়ী ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ কোনোভাবেই অনুমোদনযোগ্য নয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আয়োজকেরা রেলওয়ের দেওয়া আস্থার অপব্যবহার করেছেন এবং পূর্ব প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে পরিস্থিতিকে জটিল করেছেন।

বাংলাদেশ সরকার সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সরকার আশা করে—যথাযথ তথ্য যাচাই না করে কেউ যেন কোনো বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *