🎭 শেষ পর্বের অপেক্ষা শেষ: স্কুইড গেম-এর জগতে আবার ডুব

আজ যে সিরিজের নাম কোটি মানুষের মুখে মুখে, তার শুরুর গল্প কিন্তু একটু অন্যরকম। প্রায় এক দশক আগে লেখা হয়েছিল এই গল্প, কিন্তু তখন কেউ তেমন গুরুত্ব দেয়নি। সময় বদলেছে ২০২০-এর পর। দক্ষিণ কোরীয় সিনেমা ‘প্যারাসাইট’ যখন অস্কার জয় করল, তখন থেকেই বিশ্বজুড়ে কোরিয়ান কনটেন্টের প্রতি আগ্রহ বাড়তে শুরু করল। তখনই নেটফ্লিক্সের আলোতে উঠে আসে ‘স্কুইড গেম’।

২০২১ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিরিজ মুক্তির পরপরই ভেঙে দেয় স্ট্রিমিং দুনিয়ার প্রায় সব রেকর্ড। দ্বিতীয় মৌসুমেও তার রেশ কাটেনি। আর আজ, শুক্রবার, মুক্তি পাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত তৃতীয় ও শেষ মৌসুম।

গল্পের কেন্দ্রে সিয়ং গি-হুন—এক ঋণে জর্জরিত মানুষ, যে বিশাল অঙ্কের অর্থ জেতার লোভে প্রবেশ করে এক ভয়ংকর খেলায়। এই খেলাগুলো, যেগুলো শিশুকালীন মজার স্মৃতি হয়ে থাকার কথা, এখানে পরিণত হয়েছে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে। ‘প্যারাসাইট’ এবং ‘স্কুইড গেম’—দুই প্রজেক্টেই আমরা দেখতে পাই দক্ষিণ কোরিয়ার তীব্র শ্রেণিবৈষম্যের প্রতিফলন। আর এটাই সম্ভবত গল্পকারদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।

শুধু গল্প নয়, গ্লোবাল দর্শকসংখ্যায়ও সিরিজটি নজির গড়েছে। প্রথম দুই সিজনে মিলিয়ে দর্শকসংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬০০ মিলিয়নের বেশি। প্রথম মৌসুম একাই নেটফ্লিক্স ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় অ-ইংরেজি কনটেন্ট হিসেবে জায়গা করে নেয়।

এবার তৃতীয় কিস্তি এসে সেই পরিসংখ্যানকে আরও উপরে নিয়ে যাবে বলেই ধারণা।
পুরস্কারের দিক থেকেও ‘স্কুইড গেম’ অনন্য। এমি অ্যাওয়ার্ডসে প্রথম মৌসুমের জন্য ১৪টি মনোনয়ন এবং ৬টি জয়, গোল্ডেন গ্লোবে ও সেগ অ্যাওয়ার্ডসে সফলতা—সব মিলিয়ে এটি অ-ইংরেজিভাষী সিরিজ হিসেবে এক বড় মাইলফলক তৈরি করেছে।

এর বাইরেও, অ্যাপ স্টোরে ‘Squid Game: Unleashed’ গেমটি ১০৭টি দেশে শীর্ষস্থান দখল করেছে। আর বাস্তব জগতে? ২৫টির বেশি দেশে নেটফ্লিক্স আয়োজন করেছে ‘স্কুইড গেম’-থিমের ইভেন্ট, যেখানে হাজার হাজার ভক্ত সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন।

সিউল, নিউইয়র্ক, লন্ডন থেকে শুরু করে সিডনি পর্যন্ত—দর্শকদের জন্য চালু হয়েছে ‘The Experience’ শো। গ্রীষ্ম শেষ হওয়ার আগেই প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সিরিজের নির্মাতা হোয়াং ডং-হিউক জানিয়েছেন, পুরো যাত্রাটিই ছিল তার জন্য এক মানসিক চ্যালেঞ্জ। চূড়ান্ত পর্ব নিয়ে তিনি বলেন, এটি এক অম্লমধুর অভিজ্ঞতা—যেখানে বিদায়ের সান্ত্বনা আর অর্জনের গর্ব পাশাপাশি চলে।

লিড চরিত্রে থাকা লি জুং-জেও নিজেও জানান, এই চরিত্রকে বিদায় বলা সহজ হবে না। দর্শকদের প্রতিক্রিয়াই বলে দেবে, তারা কতটা তৈরি এই ভিন্নধর্মী সিরিজের শেষ দেখার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *